পৃথিবীতে আসা বৃথা যদি আমরা না জানি, আমাদের সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য (If we do not know the responsibility and duties to our Creator, our life is vain as a human being)
Allah-geniusmanik.com |
আমরা সৃষ্টিকর্তার
বান্দা/গোলাম/দাস ও দায়িত্বশীল প্রতিনিধি হিসেবে একজন মানুষ দৈনন্দিন কোরআন ও হাদিস
অনুসারে যেসব কাজ, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে সৃষ্টিকর্তা তা ইবাদত হিসেবে গণ্য করবে।
আমরা কয়টা মিনিট সময় দিয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সংক্ষেপে
জানার চেষ্টা করি। এই সময়টুকু যে ব্যয় করবেন তা আপনার ইহকাল ও পরকালে কাজে লাগবে। চলুন
শুরু করা যাক।
০১. সৃষ্টিকর্তাকে এক বলে
জানা: সৃষ্টিকর্তা এক,
একক ও অনন্য।সৃ্ষ্টিকর্তা ছাড়া যেমন কোন কিছু কল্পনা করা যায় না, তেমনি একাধিক বা বহুসৃষ্টিকর্তার
কথাও অকল্পনীয়। আর সৃষ্টিকর্তা তিনি, যিনি সবকিছুর নিয়ন্ত্রণকারী। সৃষ্টিকর্তা নিজেই
তার মহিমা ও এককত্ব সম্পর্কে সূরা ইখলাস ১-৪
নং আয়াতে বলেন,“ বল, তিনি আল্লাহ এক
ও অদ্বিতীয়। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সবই তার মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি,
আর তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি। তার সমকক্ষ কেউ নেই।” মহান সৃষ্টিকর্তা সূরা আম্বিয়া
২২ নং আয়াতে বলেন,“ যদি নভোমন্ডল ও
ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে তারা উভয়ে ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা
যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র।”
০২. আল্লাহকে রব বলে মানা: আল্লাহ পৃথিবীর সকল কিছুর মালিক ও পরিচালক।
তাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ,অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক
সমগ্র ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহর কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে তারই বিধি-নিষেধ
মেনে সে অনুসারে জীবন যাপন করে আল্লাহর প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য আদায় করতে
হবে। তাই সৃষ্টিকর্তা তার পবিত্র গ্রন্থে আল কোরআনে সূরা ইউসুফ ৪০ নং আয়াতে বলেন, “আমাকে বাদ দিয়ে যার ইবাদত করছ তা কতগুলো
নাম ছাড়া আর কিছুই নয়, যে নামগুলো তোমরা আর তোমাদের পিতৃ পুরুষরা রেখেছ। এ ব্যাপারে
আল্লাহ কোন প্রমাণ নাযিল করেননি। আল্লাহ ছাড়া কোন বিধান দাতা নেই। তিনি আদেশ করেছেন
যে তোমরা তাকে ছাড়াআর কারো ইবাদত করবেনা, এটাই সঠিক দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তা
জানে না।”
০৩. আল্লাহর অংশীদারিত্ব
না করা: যেভাবে আল্লাহকে
এক বলে জানতে ও মানতে হবে তেমনি ভাবে তাকে একক হিসেবে মেনে নিয়ে তার সাথে কাউকে অংশীদার
না বানানো আমাদের আরেকটি অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। আল কোরআনের ভাষায় হল শিরক।
মহান প্রভু সূরা নিসায় ১১৬ নং আয়াতে বলেন,“নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সঙ্গে শরীক করাকে ক্ষমা
করেন না, তাছাড়া অন্য সব গোনাহ যাকে ইচ্ছে মাফ করেন।”
০৪.আল্লাহর ইবাদত করা: আমরা আল্লাহর গোলাম, গোলাম বা দাস হয়ে
কখনো মালিকের অবাধ্য হওয়া যাবে না। তাই আমাদের উচিত তারই ইবাদত করা, তারই আনুগত্য করা,
তারই দাসত্ব স্বীকার করা। আল্লাহ সূরা যারিয়াত
৫৬ নং আয়াতে বলেন,“আমি মানুষ ও জিন
জাতিকে শুধু আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।”
০৫.আল্লাহকে ভয় করা: আমাদেরকে সত্য ও ন্যায়-নীতি অবলম্বন করতে
একমাত্র আল্লাহকে ভয় করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করা যাবে না। কুরআনে আল্লাহ
বলেন,“হে বানী ইসরাঈল! আমার সেই অনুগ্রহকে স্মরণ কর, যা দ্বারা আমি তোমাদের অনুগ্রহ
করেছি এবং আমার সঙ্গে তোমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে অঙ্গীকার পূর্ণ
করব এবং তোমরা কেবল আমাকেই ভয় কর।”(সূরা বাকারা ৪০-৪১)
০৬.আল্লাহর উপর ভরসা করা: বান্দার আরেকটি দায়িত্ব হল সকল কাজে একমাত্র
আল্লাহর উপর ভরসা করা। কারণ তিনি সবকিছুর মালিক এবং তিনিই সকল ক্ষমতার অধিকারী। তাই
সকল বিষয়ে তার উপর ভরসা করতে হবে। আল্লাহ বলেন,“মুমিনদের উচিত একমাত্র আল্লাহর উপর
ভরসা করা”(সূরা ইব্রাহীম ১১) পরিশেষে বলতে চাই, মানুষ হিসেবে যদি আল্লাহর প্রতি আমাদের
এই সকল দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে না পারি
তাহলে আমাদের জীবন ১৬ আনা বৃথা।
আল্লাহ আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের তৌফিক দান
করুন। (আমীন)
Post a Comment