৮৬ বছর পর এই প্রথম গতকাল শুক্রবারে জুমআর নামাজ পড়া হলো হায়া সোফিয়া মসজিদে/For the first time in eight years, Friday prayers were offered at the Haya Sophia Mosque on Friday
৮৬ বছর পর এই প্রথম গতকাল শুক্রবারে জুমআর নামাজ পড়া হলো হায়া সোফিয়া মসজিদে/For the first time in eight years, Friday prayers were offered at the Haya Sophia Mosque on Friday
গতকাল শুক্রবারে জুমার নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয় সদ্য জাদুঘর থেকে মসজিদে রূপান্তরিত হওয়া তুরস্কের হায়া সোফিয়া। ইস্তানবুলের গভর্নর আলি ইয়েরলিকায়া বলেন, মুসলিমরা উচ্ছ্বসিত।
গতকাল মসজিদটি খোলার দিনে সেখানে জুমার নামাজ পড়তে প্রায় হাজার দুয়েক মুসুল্লি অংশগ্রহন করে এবং জায়গা না পেয়ে অনেক মুসুল্লিকে বাইরের চত্তরে নামাজ পড়তে দেখা যায়।
প্রায় ৮৬ বছর পর এই প্রথম হায়া সোফিয়ায় জামাতে নামাজ পড়া হয় এবং এতে অংশ নেয় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন বার্তায় ইস্তানবুলের গভর্নর হায়া সোফিয়ায় নামাজে অংশ নিতে চাওয়া মুসল্লিদের মাস্ক পরে আসার আহ্বান জানান। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতেই তার এমন আহ্বান।
হায়া সোফিয়া ষষ্ট খ্রিস্টাব্দে বাইজেন্টাইন সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান নির্মাণ করেন। এটি তৎকালীন গ্রিক অর্থোডক্সদের প্রধান চার্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রায় ৯০০ বছর গ্রিক অর্থোডক্স প্রধান চার্চ হিসেবে ব্যবহৃত এ হায়া সোফিয়াকে অটোমান আমলে সুলতান দ্বিতীয় মেহমুদ মসজিদ হিসেবে রূপান্তর করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্কে অটোমান সাম্রাজ্য বা উসমানি সালতানাতের পতন হয় এবং ১৯৩৪ সালে মুস্তফা কামাল পাশা অটোমান আমলের মসজিদ হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরে পরিণত করেন।
ইসলামপন্থী একেএ পার্টি ক্ষমতায় আসার পর ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের দাবিতে পার্মানেন্ট ফাউন্ডেশন সার্ভিস টু হিস্টোরিকাল আর্টিফেক্টস অ্যান্ড এনভায়োরনমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠন আদালতে মামলা করে।
মামলায় দাবি করা হয়, হায়া সোফিয়া অটোমান সুলতান দ্বিতীয় মেহমুদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তিনি খ্রিস্টান পাদরিদের কাছ থেকে বায়তুল মালের অর্থে নয় বরং তার নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করে স্থাপনাটি কিনে নেন। পরে সুলতান এটি মসজিদের জন্য ওয়াকফ করেন।
সুতরাং একে মসজিদের পরিবর্তে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার অবৈধ। তবে ২০০৮ সালে আদালত এ মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজ হয়ে গেলেও একেএ পার্টি হায়া সোফিয়াকে মসজিদে পরিণত করার জন্য জনমত তৈরি চেষ্টা করে এবং ওই সংগঠনটি আবারও আদালতে মামলা করে।
গত ১০ জুলাই ওই মামলার রায়ে তুরস্কের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত হায়া সোফিয়ার জাদুঘর মর্যাদা নাকচ করেন। রায়ের পরপরই দেড় হাজার বছরের পুরনো হায়া সোফিয়া জাদুঘর থেকে মসজিদের রূপান্তরের এক ডিক্রিত স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
সেদিনই হায়া সোফিয়ায় প্রায় ৮৬ বছর পর প্রথম আজান দেওয়া হয় এবং প্রেসিডেন্ট এরদোগান এক বিবৃতিতে বলেন, ২৪ জুলাই থেকে এখানে নামাজ পড়া হবে। তিনি বলেন, হায়া সোফিয়ায় সব ধর্মের মানুষরা প্রবেশ করতে পারবে।
Please share this post.........
Post a Comment