Header Ads

৪৬তম বিসিএস আবেদনে ক্যাডার পছন্দক্রম বাছাই করবেন যেভাবে/How to choose Cadre Preference in 46th BCS Application

 

৪৬তম বিসিএস আবেদনে ক্যাডার পছন্দক্রম বাছাই করবেন যেভাবে/How to choose Cadre Preference in 46th BCS Application

৪৬তম বিসিএস আবেদনে ক্যাডার পছন্দক্রম বাছাই করবেন যেভাবে/How to choose Cadre Preference in 46th BCS Application

বিসিএসে ক্যাডার পছন্দক্রম আবেদনের সময় যেভাবে দেবেন, পরবর্তী সময়ে তা আর পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। তাই প্রতিটি ক্যাডারের কাজ, পদায়ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনেবুঝে ক্যাডার পছন্দক্রমের তালিকা প্রস্তুত করা উচিত।

পররাষ্ট্র ক্যাডার

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। শুরুতেই সহকারী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করা যায়। চাকরি স্থায়ী হলে বিভিন্ন দূতাবাসে পদায়নের জন্য বিবেচনা করা হয়। দূতাবাসে পদায়ন হলে দেশের নিয়মিত বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাসাভাড়া, সন্তানের পড়াশোনার খরচ, পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। পররাষ্ট্র ক্যাডার পেতে হলে লিখিত মৌখিক পরীক্ষায় খুব বেশি নম্বর প্রয়োজন হয়ে থাকে, তাই যাঁরা পড়াশোনায় খুব বেশি আগ্রহী, কেবল তাঁরাই পররাষ্ট্র ক্যাডার চয়েসে রাখবেন।

প্রশাসন পুলিশ ক্যাডার

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দেশ পরিচালনায় সরাসরি যুক্ত থাকেন। শুরুতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করতে হয়। দুইতিন বছর পর এসি ল্যান্ড হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। ইউএনও হিসেবে বাড়ি-গাড়ির সুবিধা আছে। ডিসি, উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সিনিয়র সচিব এমনকি কম বয়সে চাকরিতে যোগদান করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ারও সুযোগ রয়েছে।

অপর দিকে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে চাকরি হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে (এএসপি) যোগদান করতে হয়। রাজশাহীর সারদায় এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এরপর জেলা পুলিশে এএসপি হিসেবে চাকরিজীবন শুরু। আমাদের দেশের প্রশাসনিক রাজনৈতিক পরিবেশ এবং ঐতিহ্যের কারণে দুটি ক্যাডার বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে।

 

কাজের ধরন দায়িত্বের কারণে সরকারের কাছেও তাঁদের আলাদা গুরুত্ব থাকে। যাঁরা নেতৃত্ব, ক্ষমতা কিংবা অফিসের নীতিনির্ধারক হিসেবে কাজ করতে পছন্দ করেন, তাঁরা দুটি ক্যাডার পছন্দের শীর্ষে রাখতে পারেন। পুলিশ বা প্রশাসন যেকোনো একটিকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী আগেপরে রাখতে পারেন।

শুল্ক আবগারি, নিরীক্ষা হিসাব এবং কর ক্যাডার

 

এই তিনটি ক্যাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন। শুল্ক আবগারি ক্যাডার পরোক্ষ কর (কাস্টমস, এক্সাইজ, ভ্যাট) আর কর ক্যাডার প্রত্যক্ষ কর (আয়কর, ভ্রমণ কর, দান কর) সংগ্রহ করে।

 

নিরীক্ষা হিসাব ক্যাডার রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করে। এই তিনটি ক্যাডারের মধ্যে শুল্ক আবগারি ক্যাডারে বৈধভাবে অতিরিক্ত উপার্জন করার সুযোগ বেশি। শুল্ক ফাঁকি চোরাচালান ধরতে পারলে সরকার থেকে মূল্যভেদে ১০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত পুরস্কার পাবেন। এখানে পদোন্নতি খুব দ্রুত হয়। গাড়ির সুবিধা পাবেন। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য যত বাড়বে, এই ক্যাডারের কাজও তত বাড়বে।

 

সরকারের যত আয় ব্যয় হয়, তার হিসাব নিরীক্ষা করেন অডিট ক্যাডাররা। এই বিসিএস ক্যাডাররা অনেক সম্মানজনক। সবাই অডিট ক্যাডারদের সমীহ করে চলেন। সরকারের প্রতিটি বিভাগেই খরচ আয়ের হিসাবে কিছু ভুল থাকেই। আর এই ভুল ধরেন অডিট ক্যাডাররা। তাই অন্য সব বিসিএস ক্যাডার অডিট ক্যাডারদের কিছু হলেও ভয় পান। সরকারের প্রতিটি বিভাগের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন অডিট ক্যাডাররা।

 

কর ক্যাডাররা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। সরকারের প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ করা এই ক্যাডারের প্রধান কাজ। সরকারি-বেসরকারি কোনো আয়ের বিষয়ে সিআইসি গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।

 

উক্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে আহরিত রাজস্বের জন্য ইনসেনটিভ পেয়ে থাকেন। কর ফাঁকি ধরতে পারলে মোটা অঙ্কের পুরস্কার পাওয়া যায় সরকারের পক্ষ থেকে। প্রতিবছর ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সময় কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে। এই সময় রাত ১০-১২টা পর্যন্ত কাজ করা লাগতে পারে।

পদোন্নতি, কর্মপরিবেশ এবং সামাজিক মর্যাদার বিবেচনায় এগুলো খুব পছন্দনীয় ক্যাডার পদ। যাঁরা আমলাতান্ত্রিক কর্মব্যস্ততা এবং প্রশাসনিক কাজের চাপ পছন্দ করেন না; নিরিবিলি, আরামদায়ক এবং চিন্তামুক্ত চাকরিজীবন প্রত্যাশা করেন, তাঁরা নিঃসংকোচে এই তিনটি ক্যাডার পছন্দক্রমের প্রথম দিকে রাখতে পারেন। পছন্দক্রমে শুল্ক আবগারি, নিরীক্ষা হিসাব এবং কর এভাবে পর্যায়ক্রমে দিতে পারেন।

আনসার, বাণিজ্য, রেলওয়ে, ডাক পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার

আনসার ক্যাডারে পদায়ন হবে জেলা পর্যায়ে। এই চাকরিতে ঝামেলা কম। শুরু থেকেই গাড়ি আবাসিক সুবিধা আছে। পদোন্নতিও খুব ভালো। বাংলাদেশ আনসার গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যন্ত হতে পারবেন। দেশের আমদানি রপ্তানির সাম্যাবস্থা বাণিজ্য ক্যাডাররা দেখে থাকেন।

ক্যারিয়ারের শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সহকারী বাণিজ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে যোগদান করতে হয়। কাজের চাপ কম। পদোন্নতিও খারাপ নয়। বিসিএস রেলওয়ে পরিবহন ক্যাডাররা রেলওয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

চাকরির শুরুতে সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে যোগদান করতে হবে। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ মহাপরিচালক। কাজের চাপ কম। তাই প্রয়োজনীয় ছুটিও পাওয়া যায়। ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারগুলোতে উপজেলা পর্যায়ে পদায়ন হয়। তবে পদোন্নতি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলক কম। এগুলো আপনার নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে নিতে পারেন।

 শিক্ষা ক্যাডার

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে চাকরি হলে সরকারি কলেজগুলোতে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করতে হয়। কাজের চাপ তুলনামূলক কম। তবে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিসংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। পরীক্ষার হলে দায়িত্বপালন খাতা মূল্যায়ন করে বাড়তি উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। দেশে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা ট্রেনিংয়ের সুযোগ পাবেন। সেখান থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিভাগীয় প্রশিক্ষণ হয় ঢাকা কলেজের পাশে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে।

কৃষি, সড়ক জনপথ অন্যান্য ক্যাডার

এই ক্যাডারগুলো কারিগরি বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিসিএস কৃষি ক্যাডারের কর্মকর্তারা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে পদায়ন পেয়ে থাকেন। সর্বোচ্চ তৃতীয় গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়া যায়। ছাড়া অন্যান্য কারিগরি ক্যাডারগুলোতেও যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

৪৬তম বিসিএসে আবেদন করা যাবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আবেদন ফরমে ক্যাডার চয়েস বা ক্যাডার পছন্দক্রম নির্বাচনের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. রিয়াজ উদ্দিন।সূত্রঃপ্রথমআলো

 

1 comment

Anonymous said...

Excellent