মানুষ হঠাৎ অচেতন কেন হয়, এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন/Why people suddenly become unconscious, what to do in such a situation
মানুষ হঠাৎ অচেতন কেন হয়, এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন/Why people suddenly become unconscious, what to do in such a situation
হঠাৎ অচেতন বা অজ্ঞান হয়ে পড়ার ঘটনা মেডিকেলের ভাষায় সিনকোপি নামে পরিচিত। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি জটিল কোনো রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। তাই এমনটি ঘটলে সেটা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। সিনকোপির প্রাথমিক কারণ হল মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ সাময়িক সময়ের জন্য কমে যাওয়া। রক্ত প্রবাহ বিঘ্নিত হয়, এ রকম বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। ভাগ্যক্রমে, এটি স্বল্প সময়ের জন্য হয়। তবে, এটি একটি অন্তর্নিহিত রোগের ইঙ্গিত করে, যা জীবনের ক্ষেত্রে ঝুকিপূর্ণ হতে পারে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
অজ্ঞান হওয়ার সঙ্গে যুক্ত সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গের মধ্যে আছে—
● ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
● বমি ভাব বা বমি হওয়া
● মাথা হালকা লাগা, মাথা ঝিঁঝিঁ করা
● হৃদস্পন্দনের পরিবর্তন, বুক ধড়ফড়
● ঝাপসা দৃষ্টি অথবা দেখতে অসুবিধা হওয়া
● জ্বর
● হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
কোন কোন রোগে সিনকোপি হতে পারে
যেহেতু সিনকোপি হওয়ার প্রধান কারণ হলো মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হওয়া। এই রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হতে পারে বেশ কিছু কারণে—
● হার্ট অ্যাটাক
● স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোক
● যেকোনো ধরনের শক (ডায়রিয়া, বমি থেকে শরীরে পানিশূন্যতা ইত্যাদি)
● হৃদস্পন্দনের বিভিন্ন রোগ ও সমস্যা
● প্রেশার অনেক কমে গেলে
সিনকোপি হওয়ার সাধারণ কিছু কারণও আছে। যেমন—
● প্রচণ্ড তাপ বা দাবদাহ থেকে
● অত্যধিক মানসিক চাপ বা ভয় পেলে
● রক্তশূন্যতা
● খিঁচুনি
● অতিরিক্ত মদ্যপান
● হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাস, ডায়াবেটিক রোগীদের ইনসুলিন নেওয়ার পর না খেয়ে থাকলে অনেক সময় এ রকম হয়।
● হরমোনজনিত বিভিন্ন রোগ (থাইরয়েড ও স্টেরয়েড হরমোনের রোগ)
● রক্তে লবণের ঘাটতি
চিকিৎসা কী
সিনকোপি হলো বিভিন্ন রোগের সাধারণ উপসর্গ। অজ্ঞানের সময় বা পরবর্তীতে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসক রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সিনকোপির সম্ভাব্য কারণ সনাক্ত করবেন। শরীরের যথাযথ কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য রোগীকে নির্দিষ্ট পরীক্ষা করতে পরামর্শ দিতে পারেন। যেমন– হৃদ্যন্ত্রের কার্যকলাপ পরীক্ষা করতে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম/ইসিজি, বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা, প্রয়োজনে মাথার সিটি স্ক্যান করানো লাগতে পারে।
যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অজ্ঞান হওয়া কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হতে পারে। কিন্তু অবহেলা না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। অজ্ঞান হওয়ার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেই কারণে তাড়াতাড়ি কারণ নির্ণয় করা জরুরি। অনেক সময় এটি ক্ষণস্থায়ী হয় বলে এটিকে অগ্রাহ্য করার প্রবণতা দেখা যায়। যা তাকে পরবর্তীতে বড় ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এ কারণে এ রকম ঘটনা ঘটলে অবহেলা না করে, মেডিসিন–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি।সূত্রঃপ্রথম আলোর খবর
Post a Comment